
তারার আলো খবর:- সোমবার(২৭ সেপ্টেম্বর) রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালামের বদলীর খবর পেয়ে সহকর্মীরা খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছে। এ বদলীর খবরে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে তারা একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে আনন্দ উল্লাস করেন।
দীর্ঘদিন যারা আব্দুস সালামের কাছে হয়রানীর স্বীকার ও অন্যায়ভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তারা এ মিষ্টির টাকা দিয়ে মিষ্টি কিনে বিতরণ করেন বলে হাসপাতালে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। মিষ্টি বিতরণ ও মিষ্টি খাওয়া আনন্দ উল্লাসে অংশ নেন, তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারি, সিএইচসিপি ও এমএইচভি, কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এছাড়াও অংশ নেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
রংপুর সিভিল সার্জন অফিস ও তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রবিবার পরিচালক (স্বাস্থ্য) রংপুর বিভাগ স্বাক্ষরিত এক আদেশে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালামকে তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে বদলী করে তিনদিনের মধ্যে রংপুর সদরে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ,দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থেকে স্বাস্থ্য সহকারি থেকে পদোন্নতি পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক হলেও অজানা কারণে তার কোন বদলী হয়নি। এতে আব্দুস সালাম অফিস ফাঁকিসহ উপজেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে একচেটিয়া ভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এমনকি তার অধীনস্থ সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারি, সিএইচসিপি ও এমএইচভিদের সাথে নানানভাবে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। এ কারণে তার কয়েকজন সহকর্মী লিখিতভাবে জেলা সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।

এছাড়াও কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে গণটিকা কার্যক্রম কেন্দ্রে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ এনে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন, তারাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, হারুন-অর-রশিদ বাবুল। গণটিকা কার্যক্রমে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ। তদন্তের মাধ্যমে সালামের আসল উদ্দেশ্য বের করার স্বাস্থ্য বিভাগের জরুরী বলে টিকা প্রদান কাজে জড়িতরা সহ এলাকাবাসী দাবি করে।
উপরোক্ত অভিযোগ ও বিভিন্ন সাপ্তাহিক এবং দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন খবর প্রকাশের পর রংপুর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর শনিবার তারাগঞ্জে তদন্তে আসেন সিভিল সার্জন হিড়ম্ব কুমার রায় সহ তদন্ত কমিটির কর্মকর্তাগণ। তদন্তকালে স্বাস্থ্য সহকারি আব্দুস ছালাম তার প্রভাব বিস্তার করে। ফলে অন্যান্য সাক্ষীরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে অভিযোগযুক্ত ব্যক্তির সামনে সাক্ষী দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ ঘটনার পর রংপুরে চলে যান তদন্ত কমিটি।
এতে অভিযোগকারীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে এ ঘটনার পরে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বিক্ষোভ করে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালামের অপসারণ দাবি করে। তার পরদিন অর্থাৎ রবিবার কর্তৃপক্ষ তার বদলীর আদেশ দেন।