কথা রেখেছে মেধাবিকাশ
বি. আই. বাধন, বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
সন্তানের ভালো শিক্ষার জন্য সবাই যখন শহরমুখী তখন গ্রামের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কি হবে এমন চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক করে গ্রামেরই একজনের মাথায়। সেই ভাবনাকে দায়বদ্ধতা মেনে মানসম্মত আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার চিন্তাভাবনা করেন মো. বাবলু হক।
আপন গ্রামের পাশে মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলেন লালদিঘী মেধা বিকাশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো গ্রামের ছেলে মেয়েদেরকে মানসম্মত ও আধুনিক শিক্ষা সেবা প্রদান করা। বাস্তবে সফলতাও কুড়িয়েছেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এবার এসএসসি’র ফলাফলে এই প্রতিষ্ঠান থেকে ২১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০জনই পেয়েছে এ প্লাস।
বাকিদের ফলাফলও জিপিএ সাড়ে চারের উপরে।রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী বাজার থেকে আধা কিলো পূর্বে এবং লালদীঘি পীরপাল বিএম কলেজ সংলগ্ন এই মেধা বিকাশ স্কুল। জন্মটা ২০১৩ সালে। সেসময় হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির পথচলা। পিইসি, জেএসএস এবং এসএসসি পরীক্ষায় বারবার চমৎকার সফলতার কারণে প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী বৃদ্ধি হয়ে সংখ্যা এখন ৪ শতকের পথে। এখানে পাঠদান করছেন ১৩জন। শিশু বান্ধব এই প্রতিষ্ঠানের ৬ জনই নারী শিক্ষক। আধুনিক শ্রেণিকক্ষে হয় এই প্রতিষ্ঠানে পাঠদান।
শিক্ষার্থীদের পাঠে মন যুক্ত করতে বিদ্যালয়ে রয়েছে নান্দনিক পরিবেশ। বিদ্যুৎ এবং পানির রয়েছে সুব্যবস্থা। গ্রামের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা রয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিতে সরেজমিনে গিয়ে, দেখে মনে হয় যেন উপজেলার কোনো মডেল স্কুল কিংবা শহরের কোনো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কথা হয় এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাথে। কথা হয় প্রথম শ্রেণিতে পড়া ছোট্ট রাবেয়া বুসরার সাথে। নাম জিজ্ঞেস করলেই তাৎক্ষণিক ভাবে উত্তরের তীর আসে ইংরেজিতে। সুন্দর পোশাক আর পরিচ্ছন্ন শিশুটির ইংরেজি বলা দেখলে অবাক হয়ে যাবেন যে কেউ।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমানার মা রুখছানা বেগম জানান, ‘আমার মেয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পিইসিতে এ প্লাস পেয়েছে।
এত দুর্বল শিক্ষার্থী যে এত ভালো রেজাল্ট করতে পারে, এটা মেধাবিকাশে পড়ায় বুঝলাম।প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. বাবলু হক বলেন, ‘গ্রামের শিশুদের মেধাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে আমাদের প্রাণপণ প্রচেষ্টা। সুযোগ পেলে আমাদের শিশুরাই গড়বে সোনার বাংলা। এই আত্মবিশ্বাসই আমাদের সফল হওয়ার শক্তি।’