কিশোরগঞ্জে বিদ্যালয়ের সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ ভাগবাটোয়রার অভিযোগ

শাহজাহান সিরাজ,কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)- নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দের ১ কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকার নাম মাত্র কাজ করে সিংহভাগ বরাদ্দ ভাগাভাগি করা হয়েছে। এসব ভাগাভাগির সাথে জড়িত রয়েছে প্রধান শিক্ষক,সভাপতি,সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তি।এ ধরনের অভিযোগ উঠায় নির্বাহী কর্মকর্তা ২০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে- ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংস্কার কাজের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৩০ লাখ, রুটিন মেইনটেইন্স (দৈনন্দিন করণীয়) ১২১ টি বিদ্যালয়ে ৪৮ লাখ ৪০ হাজার, বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (¯িøপ) ১৭৫টি বিদ্যালয়ে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার, ওযাস বøক নির্মাণ ৭ টি বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ও প্রাকৃতিক দূযোর্গ মোকাবেলায় ১৭৫টি বিদ্যালয়ে বরাদ্দ দেয়া হয় ৮লাখ ৭৫ হাজার টাকা। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বরাদ্দের সিংহভাগ অর্থ ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়।
দক্ষিণ দুরাকুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায় স্কুলের ভিতর-বাহিরে চুনকাম করে সংস্কারের কাজ শেষ করা হয়েছে।¯িøপ বরাদ্দের কাজ ক্রয় কমিটির মাধ্যমে মালামাল কেনার কথা থাকলেও ক্রয় কমিটির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। রুটিন মেইনটেইন্স বরাদ্দের কাজ না করে অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে।
বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা রামসুন্দর দাস ও ওয়াদুদ সরকার বলেন- এসব চুনকামের কাজ করেছেন প্রধান শিক্ষিকা রুমি বেগমের স্বামী জোবায়ের হোসেন।
দলিরাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোকাদ্দেস হোসেন জানায়,সব বরাদ্দ থেকে রংয়ের কাজ,৩টা সিলিং ফ্যান,৪টা কাঠের চেয়ার কেনা হয়েছে।কিন্তু বাস্তবে এসব কাজ দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
দক্ষিণ রাজিব সরকারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়- বিদ্যালয়ে ভিতর-বাইরে রং বার্ণিশের কাজ ও বারান্দার হাফওয়ালসহ গ্রিলের কাজ করা হয়েছে। রুটিন মেইনটেনেন্স ও ¯িøপ বরাদ্দের দৃশ্যমান কোন কাজ দেখা যায় নি।তবে ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ রায় শতভাগ কাজ করার দাবী করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কযেকজন প্রধান শিক্ষক জানান – কাজ শুরুর আগেই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, ক্লাস্টার অফিসার, প্রত্যায়ন অফিসারকে টাকা দিয়ে কাজ শুরু করতে হয়। শতভাগ কাজ করার ইচ্ছে থাকলেও তা সম্ভব হয় না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফা আক্তারের সাথে কথা বললে তিনি বিদ্যালয় মেরামত কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, করোনার কারনে সবগুলো বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে কাজ চলমান রয়েছে। কাজ শেষ করার আগেই বিল উত্তোলন করলেন কিভাবে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ৩০ জুনের আগে বিল উত্তোলন না করলে বরাদ্দের টাকা ফিরৎ যেতে পারে তাই বিল উত্তোলন করে আমার হিসেব নম্বরে রেখেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত চক্রবর্তির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিদ্যালয় সংস্কার কাজ না করেই বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ২০ দিনের মধ্যে সব কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছি।