চিঠিপত্র: পরীমনির ভাই-বোন এবং নাতি-নাতনীদের মাদক দ্রব্য থেকে দূরে রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব

প্রায় একমাস থেকে নায়িকা পরীমনির মাদক সেবন এবং তাকে গ্রেফতার নিয়ে মিডিয়া পাড়ায় তুমুল হৈচৈ চলছে। আম জনতার মাঝ্ওে এটা নিয়ে আলোচনার কমতি নেই। কিন্ত আমাদের শহর-বন্দর এমনকি গ্রামগঞ্জেও আজকাল যেভাবে পরীমনির ভাই-বোন এবং নাতী-নাতনীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে তা নিয়ে আমাদের কারো মাথা ব্যথা নেই।
এদেশে সকল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ দুধ, বিক্রির জন্য দুধ বিক্রেতাকে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। আর স্বাস্থের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর মাদক দ্রব্য সেবনের জন্য মাদক বিক্রেতার বাড়িতে রিতিমত ধরণা দিতে হয়। এ সমাজে বোকারাই যেন অনেক চালাক। একজন নেশাগ্রস্থ ব্যাক্তি নিজের টাকা খরচ করে সুকৌশলে অন্যদের নেশাগ্রস্থ করে মুরিদ বানিয়ে নেয়। এভাবে দশজন মুরিদ বানাতে পারলে তাকে ভবিষ্যতে আর নিজের টাকা খরচ করে নেশা দ্রব্য কিনে খেতে হয়না। নিজের হাতে তৈরি করা মুরিদের অর্ধেক সিগারেট আর অর্ধেক বোতল হলেই তার চলে। আর এরা হয়ে যায় পরিবার ও সমাজের বোঝা।
মাদকাসাক্ত ব্যক্তি কত ভয়ঙ্কর তা একবার পাবনা মানষিক হাসপাতালে তাদের ইউনিটে গেলে উপলব্ধি করা যায়। যেখানে তাদের ট্রিটমেন্ট করতে গিয়ে কখনো কখনো চিকৎসককে মার খেয়ে আসতে হয়। অভিজাত বংশের মাদসাক্ত সন্তানের বাবাকে অশ্রুসিক্ত নয়নে হাসপাতাল ত্যাগ করতে হয়। বৃদ্ধ বাবা-মা যে বয়সে সন্তানের কাছ থেকে ভরন-পোষণের আশা করে, উল্টো বৃদ্ধ বয়সেও তাদেরকেই হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে নিজের এবং সন্তানের চাহিদা মেটাতে হয়। সমাজে তাকে হতে হয় লাঞ্চিত ও উপহাসের পাত্র।
আলোকিত দুনিয়াটা তার নিকট সবসময় মনে হয় অন্ধকার। কখনো কখনো পিতাকে জীবন দিতে হয় সন্তানের হাতে। সন্তানের জন্য পিতার এরকম অভিশপ্ত জীবন কারোই কাম্য নয়। নায়িকা পরীমনি জামিনে মুক্তি পেযেছে। কারণ এদেশে তাকে মুক্ত করার হাজারো শুভাকাঙ্খি রয়েছে। কিন্ত তার নেশাগ্রস্থ নাতি-নাতনীরা ধরা খেলে মুক্ত করবে কে? নিরীহ পিতা-মাতাকে এ দায় বহন করতে হবে।
অনেক দেরি হয়ে গেছে,ঘুমানোর আর সময় নেই। সময় এসেছে মাদক প্রতিরোধের। নিজের সন্তানের গতিবিধি সবসময় পর্যক্ষেণ করতে হবে। প্রয়োজনে পাড়ায়-মহল্লায় মাদক প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে।
সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ১০ টাকার চা-পান আর একটা ১০০০ টাকার নোটের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে যে প্রার্থী মাদক, জুয়াসহ যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাজ করার ঘোষনা দেবে, আমরা নিজের টাকা খরচ করে তার পক্ষেই কাজ করব। এটাই যেন হয় আমাদের ভোটারদের এবারের নির্বাচনী প্রতিজ্ঞা।
মোঃ আব্দুর রউফ মাসুদ
ঘনিরামপুর, তারাগঞ্জ, রংপুর।