রংপুরস্থানীয়

তারাগঞ্জের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি শূন্যের পথে

তারাগঞ্জ উপজেলার বাছুরবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির দুইজন শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদান করাচ্ছেন ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা। ছবি- তারার আলো

তারার আলো খবরঃ
দীর্ঘ ৬ মাস যাবত প্রধান শিক্ষক ছুটিতে থাকায় শিক্ষার্থী শূন্য হতে চলেছে। বিদ্যালয়টি হচ্ছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার বাছুরবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অভিভাবকদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক না থাকায় ঠিকমতো পাঠদান হচ্ছে না।

ফলে শিক্ষার্থীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ে আরও ছয়জন সহকারী শিক্ষক কর্মরত থাকলেও প্রতিদিন শিক্ষার্থী উপস্থিতি থাকে ১৪ থেকে ১৫ জন।

সরেজমিনে সোমবার(২৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণিতে পাঁচজন, চতুর্থ শ্রেণিতে দুইজন ও পঞ্চম শ্রেণিতে উপস্থিত শিক্ষার্থী মাত্র সাতজন। বিদ্যালয়ের শ্রেণি হাজিরা খাতায় তৃতীয় শ্রেণিতে রয়েছে মোট শিক্ষার্থী ২৯জন, চতুর্থ শ্রেণিতে রয়েছে মোট ৩৩জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ২১জন।

শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে চতুর্থ শ্রেণিতে পাঠদানকারী বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছাঃ মিসকে জান্নাত বলেন, রমজানের কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে না।

বিদ্যালয়ের পাশেই যাদের বাড়ি সেই সব শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে ক্লাস করাতে হচ্ছে। অপরদিকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে পাঠদানকারী দুই শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধান শিক্ষক একাধিবার ছুটি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসছে না।

তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নে বাছুরবান্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-ছবি তারার আলো

অভিভাবকরা ভাবছে আমরা(সহকারী শিক্ষকরা) ঠিকমতো ক্লাস নিচ্ছি না। তাই অনেক শিক্ষার্থী আমাদের প্রতিষ্ঠান ছেড়ে বাইরের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়াতে হলে একজন প্রধান শিক্ষককে স্থায়ীভাবে এই স্কুলের দায়িত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

বিদ্যায়ের পঞ্চম শ্রেণির, শ্রেণি শিক্ষক প্রদীপ রায়ের কাছে জানা যায়, ইতোমধ্যে পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ প্রতিটি শ্রেণি থেকেই বেশকিছু শিক্ষার্থী বিভিন্ন অজুহাতে কিন্ডার গার্টেন স্কুলে ভর্তি হয়েছে।

বিদ্যালয় মাঠে পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক জগন্নাথ ও কালীরঞ্জনের বলেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক হচ্ছে প্রধান শিক্ষক। এই স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া হচ্ছে না। সহকারী শিক্ষকরাও সময়মতো স্কুলে আসা যাওয়া করছে না। ফলে বর্তমানে এই স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ নাই। তাই অনেকে তাদের সন্তানদের অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে বাধ্য হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা (প্রাথমিক)শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, প্রধান শিক্ষক নাজমুল লায়েল ২১ সেপ্টেম্বর থেকে এপর্যন্ত চিকিৎসা জনিত ছুটিতে থাকায় বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে।

প্রধান শিক্ষক নাজমুল লায়েলের বদলীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ডিডি স্যারের বরাবরে পাঠানো হয়েছে।

ডিডি স্যারের নির্দেশনা পেলেই ওই প্রধান শিক্ষককে বদলী করে অন্য প্রধান শিক্ষককে দায়িত্বে পাঠানো হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button