রংপুরস্থানীয়

তারাগঞ্জে স্বামী বেঁচে আছে, এমন নারীও পাচ্ছে বিধবা ভাতা

উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের কিসামত মেনানগর গ্রামের নযনতারা স্বামী বেঁচে থাকলেও মৃত: দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলন করে আসছে -ছবি তারার আলো

তারার আলো খবর:-

তিন সন্তানের জননী নয়ন তারা(৪৫)। প্রায় ২০ বছর আগে কর্মসৃজন প্রকল্পে তালিকাভুক্ত হয়ে মাটি কাটার কাজ করে সরকারিভাবে টাকা উত্তোলন করে আসছেন।

তার স্বামীর নাম জামাল উদ্দিন ওরফে জমাজ্জল। জামাল উদ্দিন ঢাকায় চাকরি করেন। এই দম্পতির বড় দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে আর ছোট ছেলে সন্তানটি লেখাপড়ায় ৮ম শ্রেনীতে পড়ে। উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের কিসামত মেনানগর পঞ্চায়েতপাড়া গ্রামে বসবাসরত এই দম্পতির সংসার বর্তমানে ভালোভাবেই চলছে।

স্বামী থাকার পরেও ২০২০-২১ ইং অর্থ বছরে নয়ন তারাকে বিধবা ভাতার তালিকায় আওতাভুক্ত করেছে সমাজসেবা অফিস। নয়নতারা বর্তমানে বিধবা ভাতাসহ সরকারিভাবে দুটি সুবিধা ভোগ করছেন। নয়নতারা জানান, চেয়ারম্যান- মেম্বারক ধরি এই ভাতা করি নাই। সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করি মোটা অংকের টাকা দিয়া এই ভাতা করি নিছি।

এদিকে, ২০২১-২২ইং অর্থ বছরে ভিজিডি’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৯ বস্তা(প্রতি বস্তা ৩০ কেজি ওজনের) চাল পেয়েছেন উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের উত্তর দামোদরপুর নদীর পাড় গ্রামের হোসনে আরা বেগম(৪৭)। হোসনে আরার স্বামীর নাম আব্দুর রউফ। আব্দুর রউফ হোসনে আরার দ্বিতীয় স্বামী। এর আগে হোসনে আরার প্রথম স্বামী ছিলেন হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের চারআনি পাড়া গ্রামের নজিয়ার রহমান।

তারা দু’জনেই বেঁচে আছেন। স্বামী জীবিত রয়েছেন এরপরেও সমাজসেবা অফিস হোসনে আরাকে ২০২০-২১ ইং অর্থ বছরে বিধবা ভাতার তালিকায় চুড়ান্ত করেছেন।

তিনি পাচ্ছেন এ ভাতা। ২০২০-২১ ইং অর্থ বছরে বিধবা ভাতার তালিকায় যেসব নারীদেরকে চুড়ান্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে নয়নতারা আর হোসনে আরার মতো স্বামী বেঁচে আছেন এমন বেশ কয়েকজন নারীকে বিধবা ভাতার তালিকায় চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে একটি বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।

উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের দামোদরপুর গ্রামের হোসনে আরা বেগম স্বামী বেঁচে থাকলেও পাচ্ছে বিধবা ভাতা

তারা এই বিধবা ভাতার পাশাপাশি সরকারিভাবে অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুন অর্থের বিনিময়ে স্বামী বেঁচে আছেন এমন বেশ কয়েকজন নারীর সাথে যোগসাজস করে তাদেরকে বিধবা ভাতার তালিকায় অন্র্তভুক্ত করেছেন। ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুঠোফোনে ফোন দিলে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানান, শতভাগ বিধবা ভাতা হওয়ার পর আমি এ উপজেলায় যোগদান করেছি। তবে শুধু আপনার মুখেই শুনলাম স্বামী বেঁচে আছে এমন নারী বিধবা ভাতা পাচ্ছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button