
তারার আলো খবর / দিপক রায়:- ঋতু পরিবর্তন ছয় ঋতুর বাংলাদেশের প্রকৃতির একটি অংশ। এদেশে গ্রীষ্ম ঋতুর পরই আসে বর্ষা ঋতু। কৃষকের টিনের চালায় বৃষ্টির শব্দে জেগে ওঠে বর্ষার ছন্দ।
এরপরই আগমণ ঘটে শরৎ ঋতুর। শরৎ ঋতুর আগমণের সাথে সাথেই আগমণ ঘটে এদেশের সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজার। এরই ধারাবাহিকতায় শরতের আগমণের সাথে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে প্রতীমা তৈরির কর্মকান্ড।
উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে ৬৪টি মন্দিরে দুর্গোৎসব পালিত হলেও এ বছর ৪টি পূজা মন্দির বৃদ্ধি পেয়ে মন্দিরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮টি মন্দিরে। বৃদ্ধি পাওয়া ৪টি মন্দিরই উপজেলার সয়ার ইউনিয়নে বলে জানা গেছে।
উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক হরলাল রায়ের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী:-

দুর্গা পূজার পুরাতন ছবি।
আলমপুর ইউনিয়ন:-
১নং আলমপুর ইউনিয়নে রয়েছে ৬টি পূজা মন্দির। যাদের মধ্যে রয়েছে শেরমস্ত নদীরপাড় সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, শেরমস্ত ঠাকুরপাড়া বটতলী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, ভীমপুর সেনপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ-১, ভীমপুর সেনপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ-২, ভীমপুর সনাতনপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, ভীমপুর ধোলাইঘাট পশ্চিম হিন্দুপাড়া দূর্গা মন্দির।
উপজেলা সদর(কুর্শা ইউনিয়ন):-
উপজেলা সদর তথা ২নং কুর্শা ইউনিয়নে এবছর শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে প্রায় ১৬টি মন্দিরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে এ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ মহা উৎসবের। এই ইউনিয়নেই রয়েছে উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের কয়েক নেতার বাড়ি। এ ইউনিয়নের পূজা মন্দিরগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকজানপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, কুর্শা পুরাতন চৌপথী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, কুর্শা শেখেরচক দূর্গা মন্দির, ঘনিরামপুর বড়গোলা সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, রহিমাপুর চাকলা দূর্গা মন্দির, উত্তর রহিমাপুর সরকারপাড়া দূর্গা মন্দির, তারাগঞ্জ কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দির, ব্র্যাক মোড় দূর্গা মন্দির, অনন্তপুর সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, বিষ্ণুপুর কামারপাড়া দূর্গা মন্ডপ, বিষ্ণুপুর হরিবাসর সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, পূর্ব পলাশবাড়ী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, পশ্চিম পলাশবাড়ী দূর্গা মন্দির, কুর্শা মুড়িয়াচুয়ার পাড় দূর্গা মন্দির, ঘনিরামপুর হাড়িকাটা দূর্গা মন্দির, পলাশবাড়ী কামরাঙ্গারতল সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ।
ইকরচালী ইউনিয়ন:-
উপজেলার ৩নং ইকরচালী ইউনিয়নে এবছর ১২টি দূর্গা মন্ডপে আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে শারদীয় দূর্গোৎসবের। উপজেলার শারদীয় দুর্গোৎসবের সবচেয়ে বড় তিনটি পূজার আয়োজন হয়ে থাকে এই ইউনিয়নে। এরমধ্যে রয়েছে কাচনা খামার সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, দোহাজারী বাড়াইপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, উত্তর হাজীপুর বাড়াইপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, দক্ষিণ হাজীপুর বাছুরবান্ধা সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, দক্ষিণ হাজীপুর বালাপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, ইকরচালী বালাপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, ইকরচালী শাহপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, ইকরচালী কামারপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, ইকরচালী কামারপাড়া পুরাতন সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপ, কাচনা উত্তরপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, উত্তর হাজীপুর বামনদিঘী দূর্গা মন্দির ও উত্তর হাজীপুর সরদারপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির।
হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন:-
উপজেলার ৪নং হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নে এবছর ১২টি মন্দিরে প্রস্তুতি চলছে শারদীয় দূর্গা পূজার। এই ইউনিয়নে রয়েছে রংপুর জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি কুমারেশ রায়সহ উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের কয়েক নেতার বাড়ি। এ ইউনিয়নে এ বছর প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে কিসামত মেনানগর বানিয়াপাড়া দূর্গা মন্ডপ, কিসামত মেনানগর বাবুপাড়া সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপ, নারায়নজন জেলেপাড়া দূর্গা পূজা মন্ডপ, কাশিয়াবাড়ি কামারপাড়া দূর্গা মন্ডপ, উজিয়াল মধ্যপাড়া (অনন্তবাড়ী) দূর্গা মন্ডপ, ছাইতন তলা দক্ষিণ নারায়ণজন সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপ, উজিয়াল বাইরাকুঠি বালাপাড়া দূর্গা মন্ডপ, বারোঘরিয়া সাধুপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, বারোঘরিয়া দেবত্তর পুকুরপাড় দূর্গাপূজা মন্ডপ, সৈয়দপুর সাধুপাড়া সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপ ও কাশিয়াবাড়ি পালপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির।

দুর্গাপূজা অনুষ্ঠানের পুরাতন ছবি। সংগৃহীত
সয়ার ইউনিয়ন:-
প্রতি বছর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসব পালিত হয়ে থাকে ৫নং সয়ার ইউনিয়নে। গত বছর এ ইউনিয়নে ১৮টি মন্দিরে দূর্গা পূজার আয়োজন করা হলেও এবছর উপজেলায় যে ৪টি পূজা মন্দিরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তার সবগুলোই সয়ার ইউনিয়নে। সয়ার ইউনিয়নে যেসকল মন্দিরে বিগত বছরগুলোতে দূর্গা পূজার আয়োজন হয়ে এসেছে এবং এবছরেও আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে উক্ত মন্দিরগুলো হচ্ছে শ্যামগঞ্জ কাচারীপাড়া শ্যাম মন্দির, শ্যামগঞ্জ চড়কডাঙ্গা শিব মন্দির, সয়ার দামোদরপুর দোলাপাড়া দূর্গা মন্দির, সয়ার হাজীরহাট সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার ধোলাইঘাট সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার কাংলাচড়া বানিয়ারপুল চৌপথীর মোড় দূর্গা মন্দির, সয়ার সর্দারপাড়া দাদু নাতি দূর্গা মন্দির, সয়ার কাংলাচড়া বারোয়ারী দূর্গা মন্দির, সয়ার মাছুয়াপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার কামারপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, পূর্ব কাংলাচড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার মাঝাপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার মিস্ত্রিপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, পশ্চিম বানিয়ারপুল সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার হাজীরহাট (পুরাতন) সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার আশ্রমপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার ডারারপাড় সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার মাছুয়াপাড়া (নয়াপাড়া) সার্বজনীন দূর্গা মন্দির।
সয়ার ইউনিয়নের এবছর বৃদ্ধি পাওয়া ৪টি পূজা মন্দিরের মধ্যে রেেছ সয়ার শেখপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, সয়ার ডাঙ্গীরপাড় সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, শ্যামগঞ্জ দরগাপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, বিষ্ণুপুর সুজানগর সার্বজনীন দূর্গা মন্দির।
এবিষয়ে উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পাপন দত্ত বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও এ উপজেলায় সকলের সহযোগীতায় আশা রাখি শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আমিনুল ইসলাম জানান,উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎযাপনের লক্ষে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।