নীলফামারীরংপুরস্থানীয়

তারাগঞ্জ বালিকা স্কুল ও কলেজের প্রভাষকের চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার ও চোর আটক

তারার আলো খবরঃ
সৈয়দপুর থানার বাঙ্গালীপুর নিজ পাড়াস্থ প্রভাষক খন্দকার শহীদুজ্জামান এর বাড়ীতে ভাড়াটিয়া মোঃ আতাউর রহমান দুলাল (মাস্টার) ,পিতা-ইয়াছিন আলী, সাং-তালুক দামোদরপুর, বদরগঞ্জ, রংপুর দীর্ঘ প্রায় ০৫ বছর যাবৎ পরিবার সহ ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন। মো: আতাউর রহমান দুলাল মাষ্টার তারাগঞ্জ ও/এ বালিকা স্কুল ও কলেজের কলেজ শাখার একজন প্রভাষক।

প্রত্যেকদিন প্রয়োজনীয় কাযর্ক্রম শেষে বাসার নিচ তলায় গ্যারেজে তার ডিসকভার ১০০ সিসি গাড়িটি তালাবদ্ধ করে রাখেন। প্রতিদিনের ন্যায় গত ইং ২০/১১/২০২২ খ্রিঃ তারিখ সময় অনুমান ১০.০০ টায় তার মোটরসাইকেল টি গ্যারেজে রেখে বাসায় যান।

একই তারিখ সময় বিকাল ০৪.০০ টার সময় সৈয়দপুর বাজার যাবার জন্য বাসার নিচতলায় গ্যারেজের কাছে গিয়ে দেখেন তার ডিসকভার ১০০ সিসি গাড়িটি নাই। ইং ২০/১১/২০২২ খ্রিঃ তারিখ সময় অনুমান দুপুর ০২.০০ টা হতে দুপুর ০৩.৩০ টার মধ্যে কে বা কারা মোটরসাইকেল টি চুরি করেছে। আশে পাশে খোজা খুজি করে না পেয়ে তার বাড়ীওয়ালা খন্দকার শহীদুজ্জামান সহ সৈয়দপুর থানায় হাজির হয়ে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগ দায়ের করেন।

উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সৈয়দপুর থানার মামলা নং-৩১, তারিখ-২৫/১১/২০২২ খ্রিঃ ধারা-৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু হয়। গত সোমবার(২৬ ডিসেম্বর) আদালতের মাধ্যমে মোটরমাইকেলটি বুঝে পেয়েছেন প্রভাষক মোঃ আতাউর রহমান দুলাল (মাস্টার)।

মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগ থানায় গৃহিত হলে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলাম সৈয়দপুর থানার এসআই (নিঃ) পলাশ চন্দ্র বর্মার নিকট অভিযোগ তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই(নিঃ) পলাশ চন্দ্র বর্মা সঙ্গীয় এসআই (নিঃ) আহমদ উল্লাহ হক প্রধান, এসআই (নিঃ) ইন্দ্র মোহন রায়, এএস আই (নিঃ) আমিনুল ইসলাম এবং সঙ্গীয ফোর্স সহ বাঙ্গালীপুর নিজ পাড়া যমুনা লেনে বাদী আতাউর রহমান এর ভাড়া বাসায় চুরির অভিযোগ তদন্ত এবং চোরাই মালামাল উদ্ধার এবং চোর আটকের জন্য তৎপরতা চালায়।

অভিযোগ তদন্তকালে গোপন সোর্স এবং সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ পুর্বক যাচাই বাছাই করে দুই জন চোর কে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে অতিঃ পুলিশ সুপার, সৈয়দপুর সার্কেল জনাব মোহাম্মাদ সারোয়ার আলম এবং অফিসার ইনচার্জ জনাব সাইফুল ইসলাম এর দিকনির্দেশনায় সৈয়দপুর থানাধীন মুন্সিপাড়া ইসলামিয়া স্কুল সংলগ্ন মোঃ আশরাফুল আলম নিরব (২৯), পিতা- মান্নানকে ইং ২৪/১১/২০২২ খ্রিঃ তারিখ সময় রাত ০৩.৩০ ঘটিকায় ঘটনার চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়।

আটকের পরবর্তীতে আসামী আশরাফুল আলম নিরব কে নিবির ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে বাঙ্গালীপুর নিজপাড়ার বাদী আতাউর রহমানের ডিসকভার ১০০ ‍সিসি মোটর সাইকেল চুরির বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। এবং চুরির ঘটনায় জড়িত অপর আসামীদের তথ্য প্রদান করে।

আসামী আশরাফুল আলম নিরবের তথ্য মোতাবেক সৈয়দপুর বাজারের কিছুক্ষন মোড় হতে ইং ২৪/১১/২০২২ খ্রিঃ তারিখ সময় রাত ০৪.৩০ ঘটিকায় উক্ত চুরির সাথে জড়িত অপর আসামী মোঃ নুর আলম ওরফে মামুন ওরফে ছোটবাবু (২৮), পিতা- মোঃ ওহেদুল, সাং- কাজীপাড়া,সৈয়দপুর , নীলফামারীকে আটক করা হয়।

আটকের পরবর্তীতে উভয় আসামীকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা চুরির ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং মোটরসাইকেল দিনাজপুর বীরগঞ্জে অজ্ঞাত ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করেছে মর্মে তথ্য দেন।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই বাছাই করে একই তারিখ আসামী আশরাফুল আলম নিরবের বাড়ী হতে আলামত হিসেবে ক) একটি কালো রংয়ের সিনথেটিক জ্যাকেট, খ) একটি মাটি কালারের গ্যাবাডিন ফুল প্যান্ট, গ) একটি খয়েরী রংয়ের পাতলা চাদর যার দৈর্ঘ্য অনুমান তিন হাত এবং প্রস্থ অনুমান দেড় হাত জব্দ করা হয়।

এবং অপর আসামী মোঃ নুর আলম ওরফে মামুন ওরফে ছোটবাবুর বাড়ী হতে আলামত হিসেবে ক) একটি সাদা- মিস্টি কালারের প্রিন্টের ফুল হাতা শার্ট জব্দ করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম মহোদয়ের অনুমতি এবং দিকনির্দেশনা মোতাবেক এসআই(নিঃ) পলাশ চন্দ্র বর্মা সঙ্গীয় এসআই (নিঃ) আহমদ উল্লাহ হক প্রধান, এসআই (নিঃ) ইন্দ্র মোহন রায়, এএস আই (নিঃ) আমিনুল ইসলাম এবং সঙ্গীয ফোর্স সহ দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানা এবং খানসামা থানা এলাকায় মোটর সাইকেল উদ্ধারে জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কিন্ত গ্রেফতারকৃত আসামী অপর অজ্ঞাত আসামীর নাম ঠিকানা সংক্রান্তে পুনাঙ্গ তথ্য প্রদান না করায় উক্ত তারিখ মোটরসাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হয় নাই। পরবর্তীতে আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ শেষে চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধারের জন্য ক্রমাগত তৎপরতা চালানো হয়।

মামলার তদন্তকালে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে আসামী আশরাফুল আলম নিরব এবং নুর আলম ওরফে মামুন ওরফে ছোটবাবুকে ০১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ায় গত ০৪/১২/২০২২ খ্রিঃ তারিখ তাহাদের কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়।

পুলিশ হেফাজতে গ্রহন করে আসামীদেরকে চোরাই মোটরসাইকেল টির বিষয়ে দফায় দফায় এবং পৃথক পৃথক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায় বাদীর চোরাই যাওয়া মোটরসাইকেলটি তারা গত ইং ২০/১১/২০২২ খ্রিঃ তারিখ চুরি করে সৈয়দপুর থানাধীন বাইপাস রোড সংলগ্ন ভাটার মোড়স্থ জনৈক খোকন এর পরিত্যক্ত পুকুরে সুকৌশলে কচুরিপানার নিচে পানিতে লুকাইয়া রাখে।

আসামীদের দেয়া তথ্য মোতাবেক চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারের জন্য অফিসার ইনচার্জ মহোদয়কে অবহিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ) পলাশ চন্দ্র বর্মা সঙ্গীয় এসআই (নিঃ) আহমদ উল্লাহ হক প্রধান, এএস আই (নিঃ) আমিনুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্স সহ জিডি নং-২৫৬,তারিখ-০৫/১২/২০২২ খ্রিঃ মুলে সৈয়দপুর থানাধীন বাইপাস রোড সংলগ্ন ভাটার মোড়ে উপস্থিত হন।

ভাটার মোড়ে উপস্থিত হয়ে জনৈক খোকন এর পরিত্যক্ত পুকুরে খোজা খুজি করলে একপর্যায়ে চোরাই যাওয়া মোটরসাইকেলটি কচুরীপানার নিচে পানিতে দেখতে পেয়ে সেখানে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে পর্যাপ্ত লাইটের আলোর ব্যবস্থা করে ইং ০৫/১২/২০২২ খ্রিঃ তারিখ সময় রাত ০৪.৩০ ঘটিকায় ”একটি পুরাতন ব্যবহৃত রেজিস্ট্রেশনবিহীন কালো- বাদামী রংয়ের মোটর সাইকেল। যাহার চেসিস নং- MD2A14AZ5FWD-91560 এবং ইঞ্জিন নং- SBZWFD-12166. যাহা মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।যাহার মুল্য অনুমান এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার টাকা।” টি বিধি মোতাবেক জব্দ করা হয়।

এবং পরবর্তীতে মামলা সহিত জড়িত থাকতে পারে এরুপ আসামীকে সনাক্ত এবং গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অদ্য ইং ০৫/১২/২০২২ খ্রিঃ তারিখ বিজ্ঞ আদালতের আদেশে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করতঃ আসামীদের কে পুনরায় বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়। মামলার তদন্ত চলমান । গত সোমবার আদালতের মাধ্যমে উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেলটি প্রভাষক আতাউর রহমান দুলাল মাষ্টারকে প্রদান করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button