প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা, কাঙ্ক্ষিত পারিশ্রমিক না পেয়ে হতাশ

তারার আলো ডেস্ক: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাৎসব ঘিরে পূজা মন্ডপে মন্ডপে এবং বাড়িতে বাড়িতে দেবীর প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎ শিল্পীরা।
আর ক’দিন পরেই মর্তে আসছেন মা দেবী দুর্গা। এ উপজেলায় দেবীর আগমনকে ঘিরে দিন রাত পরিশ্রম করে তাদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন একেকটি অসাধারণ সুন্দর প্রতিমা। মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কয়েকদিনের মধ্যে রঙ এর কাজ শুরু করবেন শিল্পীরা। পাশাপাশি পূজা মন্ডপে সাজসজ্জার প্রস্তুত নিতে শুরু করেছে মন্ডপগুলোর কমিটি। উপজেলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, শিল্পীরা পূজা মন্ডপের পাশাপাশি নিজ বাড়িতেও করছেন প্রতিমা তৈরির কাজ।
প্রতিমা শিল্পীরা জানান , এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীদের সর্বনিন্ম ব্যয় হয় ৮ থেকে ১১ হাজার টাকা। প্রতিমা তৈরির জন্য তাদের ৩ থেকে ৪ ভ্যান কুমোর মাটি লাগে। খড়ের আউর লাগে ৫ থেকে ৬ পৌন। এছাড়াও কাঠ, বাঁশ, রশি, পেরেক, সুতা ও ধানের গুড়াসহ বিভিন্ন উপকরণের প্রয়োজন হয়। আর বাকি জিনিসগুলোর জন্য ব্যয় হয় তাদের আরো ৩-৪ হাজার টাকা। এদিকে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ কম হবে বলে জানান মৃৎ শিল্পীরা।
শিল্পীরা আরো জানান, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে প্রতিমা তৈরির উপকরণ কিনতে হচ্ছে বেশী দামে। এবার প্রতিমা বিক্রি করে কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ার বিষয়ে হতাশ শিল্পীরা। জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথটি ধরে রাখতে লাভ না হলেও প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন তারা। তবে এভাবে লোকসান হতে থাকলে না খেয়ে দিন কাটবে বলে জানান তারা।
উপজেলার নওদাবাস এলাকার প্রতিমা তৈরির শিল্পী ল²ী কান্ত বলেন, গতবছরের তুলনায় কম সেটের প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছি। গতবছর ৮টি প্রতিমা সেট তৈরির কাজ করেছি এবার সময় কম থাকার কারনে মাত্র ৬টি সেটের কাজ নিয়েছি। বেশি প্রতিমা সেট তৈরির কাজ নেইনি। এই প্রতিমা হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে যাবে। এবারে সর্বোচ্চ মূল্য ১৬ হাজার টাকার একটি প্রতিমা সেটের কাজ পেয়েছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু দীলিপ কুমার বর্মন বলেন, এবার হাতীবান্ধায় মোট ৭২টি পূজা মন্ডপে দেবী দূর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবছর দুইটি পূজা মন্ডপ বেড়েছে, গতবছর ৭০টি মন্ডপে দেবীর পূজা করা হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, এবার পূজোয় অবশ্যই গতবছরের ন্যায় সকল ভক্তদের মুখে মাস্ক থাকতে হবে। সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিমা দর্শন করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের দেওয়া সকল নিয়ম মেনে পূজা উদযাপন করতে হবে।