বাঁশের সাঁকোই ভরসা

কমল কান্ত রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):-রংপুরের গঙ্গাচড়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)এর অধীন আলমবিদিতর ইউনিয়নের ঘাঘট নদীর উপর কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোই এখন ভরসা। স্থানীয় লোকজন এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলজিইডি রশি টানাটানিতে আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
জানা যায়, আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান ও কুটিপাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে ঘাঘট নদ প্রবাহিত হয়েছে। যা সবার কাছে পাইকান-কুটিরঘাট নামে পরিচিত। সেখানে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সাইফন নির্মান করা হয়েছে। তি¯তা সেচ প্রকল্পের পানি সেই সাইফুনের দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে সেচ সুবিধা দেওয়া হয় কৃষকদের। ওই ঘাটে ব্যক্তিগত উদ্যোগে লোহার পাত ও বাঁশ দিয়ে প্রায় ১০০ মিটার একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল প্রায় দেড় যুগ আগে। তার আগে লোকজন সেখানে নৌকায় পারাপার হত।
এই সাঁকোর উপর দিয়ে রংপুর কিংবা গঙ্গাচড়া উপজেলার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আলমবিদিতর ইউনিয়নের ডাঙ্গী পাইকান, প্রামানিক পাড়া, তুলসীর হাট, ফুলবাড়ীর চওড়া, মেছনীকুন্ডা, সয়রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। যুগ যুগ ধরে লোকজন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। প্রতিবছর সাঁকোটি মেরামত করে এলাকার মানুষজন চলাচল করে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়,সাঁকোটির উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাঘট নদ পার হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ, ব্যবসায়ীসহ অনেকে। দোকানের ভারী মালামাল কিংবা মোটরযান আরোহীরা বাধ্য হয়ে বেতগাড়ী ইউনিয়ন হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার রা¯তা ঘুরে আসছে।
পাইকান কুঠিগ্রামের মোসলিম উদ্দিন বলেন, অনেকদিন থাকি শুনি এ্যাটে নাকি লোহার ব্রিজ, পাকা ব্রিজ অমুক-তমুক কত কি হইবে কিন্তু আজ পর্যšত কোনো লক্ষণ দেখনো না বাহে।
পাইকানকুঠি আলহাজ্ব তমেরিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, খুব কষ্ট করে সেতুর ওপর দিয়ে নদী পার হতে হয়। নগরবন্দ বড়াইবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকুজ্জামান স্বপন জানান, ইউনিয়নের অšতত ৫০০ জন শিক্ষার্থী স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় ক্লাস করতে এই বাঁশের সেতুটি পার হয়। এখানে পাকা সেতু হওয়া খুব দরকার।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আফতাবুজ্জামান বলেন, কুটির ঘাটে একটা ব্রিজের জন্য উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় একাধিকবার প্র¯তাব দিয়েছি। ব্রিজটি হলে মানুষের দীর্ঘ দিনের কষ্ট লাঘব হতো। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলজিইডি রশি টানাটানির কারনে যুগ যুগ ধরে লোকজন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হলেও দীর্ঘদিন থেকে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও আজও তা বা¯তবায়ন হয়নি।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে ঘাঘট নদের কারনে তি¯তা সেচ ক্যানেলের পানি নিচ দিয়ে প্রবাহের জন্য একটি সাইফন নির্মান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন যদি লোকজন ক্যানেলের ডাইক দিয়ে চলাচল করে তাহলে সেখানে একটি ফুট ব্রিজ দেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এলাকার সংসদ সদস্যের ডিও লেটার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করতে হবে। তাহলে হয়তো কাজ হবে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ,গঙ্গাচড়া উপসহকারি প্রকৌশলী সহিদার রহমান বললেন অন্য কথা। তিনি বলেন যেখানে বাঁশের সাঁকোটি আছে সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলের সাইড। এই সাইড দিয়ে লোকজন চলাচল করে। তিনি আরো বলেন, আমাদের রা¯তা উজানে। সে রা¯তা নদীতে ভেঙ্গে গেছে। ঢাকা থেকে এলজিইডির লোকজন এসে মাটি পরীক্ষা করা গেছে। কিন্তু যেখান দিয়ে ব্রিজ হওয়ার কথা সেখানের দুরত্ব অনেক। যার কারনে সম্ভব হয়নি।