ভিজিডি’র চাল কম দেওয়ার অভিযোগে সংঘর্ষে, আহত-৫
আব্দুল মালেক,উলিপুর
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নে ভিজিডি’র চাল কম দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে। এ ঘটনায় পরিষদের সহকারি হিসাব রক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর রাশেদ সরকার বাদি হয়ে মামলা ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১৮। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে দু’দিন ধরে ভিজিডির চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। ৩’শ ৯ জন ভিজিডির কার্ডধারীকে গত নভেম্বর ও চলতি ডিসেম্বর দুই মাসের চাল এক সঙ্গে দেওয়ায় কার্ডধারীরা ৩০ কেজি করে ২ মাসে ৬০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রত্যেককে ৬০ কেজির স্থলে ৫০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছিল। ভুক্তভোগি ও স্থানীয়রা চাল কম দেয়ার প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের লোকজনের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে।
এতে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন। আহতরা হলেন, আওলাদ মিয়া (৩৫), সাজ্জাদ হোসেন (৩৮), নাসির উদ্দিন (৩০), জহুরুল (৪০), ও বাইজিদ মিয়া (৩০)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে তাদের মধ্যে থেকে গুরুত্বর আহত জহুরুল ও নাসিরের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উভয়কে প্রথমে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। এ খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
ভিজিডির ভ‚ক্তভোগী আনোয়ারা বেগম,বিউটি বেগম, রুকাইয়া মিম, ছালেহা বেগমসহ কার্ডধারীদের অভিযোগ, হামরা দুই মাসে ভিজিডির চাউল ৬০ কেজি পামো, কিন্তু চেয়ারম্যানের লোক ৫০ কেজি করি চাউল দিয়া কয়, ধরি ভাগো। হামরা গরিব মানুষ কিছু কবার ক্ষমতা নাই তাই বাধ্য হয়া ধরি আছচি।
স্থানীয় ছোলেমান মিয়া, আঃ ওহাব আলী, আব্দুল করিমসহ অনেকে বলেন, দুইদিন থেকে প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল কম দেওয়ায় এলাকার মধ্যে অসন্তোষ চলছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউপি চত্বরে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে চেয়ারম্যানের লোকজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে কথাকাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি বাঁধে। এতে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কতর্ব্যরত চিকিৎসক নাদিয়া জাহান জানান, আহত ৫ জনের মধ্যে ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রামের প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্যরা চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, চাল কম দেয়ার অভিযোগ মিথ্যা। স্থানীয় কিছু বখাটে ছেলে ইউনিয়ন পরিষদে এসে এক বস্তা করে চাল দাবী করে। তাদের চাল না দেয়ায় তারা হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করেন। ঘটনার সময় আমি ইউনিয়ন পরিষদে ছিলাম না। মারামারির খবর শুনে ইউনিয়ন পরিষদে ছুটে আসি। মুলত কুচক্রী মহল এই হামলার সাথে জড়িত।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত)ও সহকারী কমিশনার(ভুমি)কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন,মারামারির খবর পেয়ে দ্রæত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি সরোজমিন তদন্ত করে এবং পুলিশ প্রশাসন ও চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।