রংপুরে গণটিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভীড়

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুরঃ
রংপুরে গণটিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অধিকাংশ কেন্দ্রেই টিকাদানের সক্ষমতার বিপরীতে দ্বিগুনেরও বেশী মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছেন। কোথাও কোথাও কেন্দ্রে ছয়শ টিকার মজুদ শেষ হওয়ায় টিকা না নিতে পেরে অনেকে ফিরে গেছেন।
শনিবার(৭ আগস্ট) দুপুরে একাধিক কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গণটিকাদানের প্রথম দিনে রংপুর জেলায় মোট ৬৫ হাজার ৪০০ জনকে টিকা দেয়া হচ্ছে। জেলার ৮ টি উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে একটি করে টিকাদান কেন্দ্রে ৩ টি করে বুথ থাকবে এবং প্রত্যেকটি বুথে ২০০ জন করে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে মোট ৬০০ জন টিকা নিতে পারবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ টি ওয়ার্ডে ১ টি করে টিকাদান কেন্দ্রে ৩ টি বুথে মোট ৬০০ জনকে টিকার আওতায় আনা হবে। উপজেলার বাসিন্দাদের সিনোফার্মের ৪৩ হাজার ২০০ এবং সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দাদের মডার্নার ২২ হাজার ২০০ শত ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রগুলোতে ৩ জন করে ভ্যাকসিনেটর, ৩ জন স্বেচ্ছাসেবক ও টিকা গ্রহণের পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রয়েছে।
কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি বুথের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন নারী ও পুরুষরা। কিন্তু এত পরিমানে টিকা দেওয়া সক্ষমতা না থাকায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেকে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে বয়স্কদের সংখ্যাই বেশী।
পীরগাছা উপজেলার কান্দিহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণটিকা নিতে আসা ফেলানী রানী(৫৭) বলেন, মুই করোনাথ থাকি বাঁচবার জন্য টিকা নিবার আসছোম। সকাল থাকি লাইনোত খাঁড়া হয়া আছোম। মেলা মানুষ। শুননু খালি অল্প কয়জনক বলে টিকা দিবে। মুই এ্যালা পামকি না পাম। এই গরমত লাইনোত খাঁড়া হয়া থাকতে থাকতে জীবনটা বুঝি যায়।
ওই কেন্দ্রে টিকা নেয়া আফসার আলী জানান, গতকালকে খবর জানার পর সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এক ঘন্টা পর টিকা নিতে পেলাম। টিকা নেয়ার পর এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি।
পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু আল হাজ্জাজ জানান, আজ(শনিবার) পীরগাছা উপজেলায় ৯টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৫ হাজার ৪ শত জনকে গণটিকা দেয়া হবে। যারা টিকা পাবে না তাদেরকে পরবর্তীতে টিকা দেয়া হবে।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, টানা ৭ দিন গণ টিকার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। প্রথম দিনে গণটিকাদানের পর ১৪ তারিখে দ্বিতীয় দফায় গণটিকা কার্যক্রম চলবে।