
গঙ্গাচড়ায় পানির তোড়ে শেখ হাসিনা তিস্তা সংযোগ সেতুর রংপুর-কাকিনা সড়কের ২৫০ ফুট অংশ ভেঙে পড়েছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।- ছবি-প্রতিনিধি
স্টাফ রিপোর্টার,গঙ্গাচড়া (রংপুর):-
প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে আসা ঢলে তিন্তাা নদীর পানি গত মঙ্গলবার রাত থেকে বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অকাল বন্যায় পানিবন্দি এখনো প্রায় ১৫ হাজার পরিবার।
পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে বাঁধ ও তিস্তা সংযোগ সড়ক। রংপুর-লালমনিরহাট সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পানিবন্দি লোকজনের মাঝে চরম দুর্ভোগ।
তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে এখনো পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে সাম্প্রতিক সময়ে নির্মিত পশ্চিম ইচলি এলাকার বাঁধের ৫’শ ফুট অংশ। ভেঙ্গে গেছে শেখ হাসিনা তিস্তা সংযোগ সড়কের রংপুর- কাকিনা সড়কের রুদ্রেশ্বর এলাকার পাকা সড়কের ২৫০ ফুট। তিস্তা প্রতিরক্ষা ডানতীর বাঁধে মহিপুর এলাকায় ধ্বসে গেছে ১৫০ ফুট অংশ।
বিভিন্ন ইউনিয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। উঠতি আমন ক্ষেতের ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।
হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারনে চরাঞ্চলে সদ্য রোপনকৃত আলু ও কুমড়া বীজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষকের । এদিকে পানি বন্দি লোকজনের মাঝে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। লোকজন বাঁধে কিংবা উচু স্থানে অবস্থান করছেন। গবাদিপশু নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে । সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা ব্যারাজের ভাটি এলাকা ঊপজেলার নোহালী ইউনিয়নের নোহালী, চর নোহালী, বাগডোহরা, মিনার বাজার, চর বাগডোহরা ও নোহালী সাপমারী, আলমবিদিতর ইউনিয়নের হাজীপাড়া ও ব্যাংকপাড়া, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, উত্তর চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনা মাঝের চর, সাউদপাড়া ও বাবুরটারী, বাঁধেরপাড়. লক্ষিটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, পূর্ব ইচলী, জয়রামওঝা, পশ্চিম ইচলী, মহিপুর ও কলাগাছি, গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, গাউছিয়া,জয়দেব, রমাকান্ত, একনাথ ও কালির চর এবং মর্নেয়া ইউনিয়নের আলাল চর, তালপট্টি চর , হাজির পাড়া , নরসিংহ , মর্নেয়া চর এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি , জেলা প্রশাসক আসিব আহসান , উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম বৃহস্পতিবার( ২১অক্টোবর) বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও পানিবন্দি লোকজনের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন।
কোলেকান্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু জানান, শুধু তার ইউনিয়নেই ৩ হাজার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
লক্ষিটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান , গত মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ অবস্থায় লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়। এবারে ভয়াবহ বন্যায় তার এলাকার সাতটি ওয়ার্ডে এখনো ১১ হাজার পরিবার এখনো পানি বন্দি রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হক বলেন, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে পানিবন্দি লোকজনের জন্য ২০ মে:টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে বৃহষ্পতিবার ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরন করা হয়েছে।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্ট বন্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকারিয়া আলম বলেন রংপুরে তেমন কিছু ক্ষতি হয়নি। দু’এক জায়গায় একটু সমস্যা হয়েছিল তা ঠিক করা হয়েছে। বন্যা সতর্কীকরন কেন্দ্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, পানি কমিয়ে বৃহষ্পতিবার (২১অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০) ৪৫ সে.মি. নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।