
বি. আই. বাধন, বদরগঞ্জ: রংপুরের বদরগঞ্জে মোবাইলে কল ও এসএমএস করা এবং নববধূকে নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ চাপিয়ে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন মমিনার পরিবার। ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে একটি অসহায় পরিবারের উপর দফায় দফায় হামলা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এতে আতঙ্কে আছেন ওই পরিবারের সদস্যরা।
উপজেলার ১৪নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বুজরুক বাগবাড় মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আশিকুর রহমান। আশিকুর জানান, তার ছোটভাই আব্দুর রাজ্জাকের নামে পাশের গ্রামের আমিনুল ইসলামের নব বিবাহিতা মেয়ে মমিনাকে মোবাইলে কল ও এসএমএম দেওয়া এবং বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসা মমিনাকে নিয়ে উধাও হওয়ার অপরাধে দোষী করা হয়। এব্যাপারে গ্রাম্য সালিশে তাদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার পরিবারের উপর দফায় দফায় হামলার চেষ্টা চালান মমিনার পরিবারের লোকজন। হামলাকারীদের ভয়ে তারা বাড়ির বাইরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
সরেজমিনে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতিকালে মমিনার সাথে বিয়ে হয় তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার কাজীপাড়া ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে খোকন মিয়ার। বিয়ের পর নববধু বাবার বাড়ীতে বেড়াতে এসে রাতের বেলা উধাও হয়ে যায়। মমিনার পরিবারের সন্দেহ, আব্দুর রাজ্জাক মমিনাকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। রাজ্জাকের বড়ভাই আশিকুরের দাবি, তার ভাই মমিনা উধাওয়ের কয়েকদিন আগেই বাড়ির বাইরে গেছে। এ বিষয়ে উভয় পরিবারকে নিয়ে গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশে মাতবররা কলেজ ছাত্র রাজ্জাকের পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে রায় ঘোষণা করেন। কিন্তু রাজ্জাকের পরিবার ওই মোটা অংকের ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে উত্তেজনার মধ্যে গ্রাম্য সালিশ ভেঙ্গে যায়।
এবিষয়ে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাকের বড়ভাই আশিকুর রহমান বলেন, আমার ছোটভাই আমিনুলের মেয়েকে নিয়ে উধাও হয়নি। সে অন্য কারো সাথে পালিয়েছে। অথচ তারা কোনো প্রমাণ ছাড়াই আমার ভাইকে সন্দেহ করে গ্রাম্য সালিশে আমাদের কাছে ৫লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করছে। আমরা টাকা না দেওয়ায় তারা দফায় দফায় আমাদের উপর হামলা করেছে। আমরা তাদের ভয়ে বাড়ির বাইরে যেতে পারছি না। শুধু তাই নয়, আমাদের একটি রাইস মিল তারা গায়ের জোরে বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের বাড়িতে ঢিল ছোড়ছোড়ি করছে। এর ফলে ঘরের চালা ছিদ্র হয়েগেছে। এছাড়াও লাঠির আঘাতে জানালা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করা কালে আশিকুরের প্রতিপক্ষরা পুনরায় তাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে জখম করে। এসময় সাংবাদিকরা পুলিশের সহযোগীতা চাইলে তাৎক্ষণিক বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে নববধু মমিনা খাতুনের পক্ষের রাজা মিয়া ও নুরুন্নবীর সাথে কথা বলতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি। এমনকি নববধু মমিনা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়। উভয়পক্ষ এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।